বেসরকারী টিভি চ্যানেল গুলোর ও রেডিওগুলোর অনুষ্ঠানের সঞ্চালকদের কথা শুনলে মেজাজটাই পুরো খারাপ হয়ে যায়। উচ্চারণ, ভাষার বদল এতটাই চোখে পড়ে মেজাজ খারাপ না হয়ে পারে না। আর নাটকগুলোর সংলাপ শুনলে মনে হয়, এ আমি কোন ভাষা শুনছি! অভিনয় একটা শিল্প এবং তার শিল্পী হলো অভিনেতা/আভিনেত্রীরা আর সঞ্চালকরা হলো বাচিক শিল্পী। শিল্পীরা যদি শিল্পটাকে নোংরামো করে নিচের দিকে নিয়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষরা কি করবে?
প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা হতে, প্রাকৃত, অপভ্রংশ হয়ে আমাদের আধুনিক বাংলা ভাষায় রূপান্তরিত হতে সময় লেগেছে প্রায় দু'হাজার বছরের বেশী। আমাদের বাংলা ভাষার প্রচীন রূপ প্রায় হাজার বছরের পুরোনো (৯০০-৯৫০খ্রিস্টাব্দ)।
প্রত্যহদিন মানুষের মুখের কথা উচ্চারণের তারতম্যের কারণে ভাষার পরিবর্তন হয়। এভাবে বদলাতে বদলাতে ১৮০০ সালের পর আমরা আধুনিক বাংলা ভাষা পেয়েছি। কিছু উদাহরণ দেওয়া যাক-
প্রত্যহদিন মানুষের মুখের কথা উচ্চারণের তারতম্যের কারণে ভাষার পরিবর্তন হয়। এভাবে বদলাতে বদলাতে ১৮০০ সালের পর আমরা আধুনিক বাংলা ভাষা পেয়েছি। কিছু উদাহরণ দেওয়া যাক-
কর্ণ(প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা)>কণ্ন (প্রাকৃত)>কান(প্রাচীন বাংলা)> কান( আধুনিক বাংলা)
চন্দ্র(প্রাভাআ)>চন্দ(প্রাকৃত)>চান্দ(প্রাবাং)>চাঁদ(বাং)
চন্দ্র(প্রাভাআ)>চন্দ(প্রাকৃত)>চান্দ(প্রাবাং)>চাঁদ(বাং)
যখন হতে আমার বুঝার ক্ষমতা হয়েছে তখন টেলিভিশন(বিটিভিতে) এবং বাংলাদেশ বেতার অনুষ্ঠানগুলো সঞ্চালনা হতো আধুনিক বাংলা ভাষায় , নাটকগুলোও আধুনিক বাংলা ভাষায় সংলাপ ব্যবহৃত হতো(চরিত্রের প্রয়োজন অাঞ্চলিক ভাষা ব্যবহৃত হতো তা ভিন্ন কথা)। অবশ্য বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার এখনো তা বহাল রেখেছে। কিন্তু ১৫-১৭ বছরে বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো ও অতিআধুনিক অভিনয় শিল্পীদের কল্যাণে ভাষা পরিবর্তিত হয়ে ২০১৫ সালে ভাষার কথ্য রূপ দাড়িয়েছে এরূপ-
খেয়েছো(আধুনিক বাংলা)>খাইছো(২০১৫)
করেছি(আধুনিক বাংলা)>করছি(২০১৫)
করেছি(আধুনিক বাংলা)>করছি(২০১৫)
তাহলে আমরা ধারণা করতে পারি আগামী ২০৩০ সালে ভাষার কথ্য রূপ দাঁড়াবে-
খেয়েছো(আধুনিক বাংলা)>খাইছো(২০১৫)>খেছো(২০৩০)
করেছি(আধুনিক বাংলা)>করছি(২০১৫)>কছি(২০৩০)
পড়বে(বাংলা)> পড়বা(২০১৫)> পবা(২০৩০)
করেছি(আধুনিক বাংলা)>করছি(২০১৫)>কছি(২০৩০)
পড়বে(বাংলা)> পড়বা(২০১৫)> পবা(২০৩০)
ভাষার পরিবর্তন এতই দ্রুত হচ্ছে সাথে উচ্চারণও তাতে মনে হচ্ছে ২০৩০ সাল অবধি বাংলা ব্যাকরণে আরও নতুন নতুন বিধি সংযোজন করা লাগবে। অতি দ্রুত কেন এরুপটা ঘটছে, তার কারণ বোধহয় আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছি। ভাষা পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু পরিবর্তনটা তার নিজস্ব গতিতে। আর আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো, রেডিও গুলো তাদের পুঁজিলাভের জন্য অপসংস্কৃতি প্রচার করে, অপসংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে আমাদের ঐতিহ্যগত নিজস্ব বাংলা সংস্কৃতিকে ধ্বংশ করে চলছে এবং চলতে থাকবে।
১১/১২/১৫
No comments:
Post a Comment