১.
দূর হতে আযানের ধ্বনি প্রতিটি অট্টালিকায় প্রতিধ্বনিত হয়ে মধুর সুরে ঘুমন্ত শরীফকে জাগালো। শরীফ চোখ মেলে তাকাতেই নতুন ভোরের মৃদু আলো জানালা দিয়ে তার চোখ স্পর্শ করছে। ঘুম ঘুম চোখে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে ফযর নামাযের জামাতের সময় চলে যাচ্ছে। সে তারাতারি বিছানা থেকে উঠে ওযু করে মসজিতে চলে যায়।নামায শেষ করে ঘণ্টাখানেক কোরআন পড়ে হোটেল থেকে নাস্তা কিনে বাসায় ফিরে। গোসল সেরে নাস্তা খেয়ে আলনা থেকে শার্ট, প্যান্ট আর টাইটা নিয়ে তৈরি হতে থাকে অফিসে যাওয়ার জন্য। টাইটা পরার সময় সে মনে মনে বলে, ‘কেন যে এটা পড়তে বাধ্য করেছে?’ জুতোটা পরে দাঁড়িয়ে খেয়াল করে দেখে প্যান্টটা কণ্টার উপরে ঠিক আছে কিনা দেখে অফিসে চলে যায়, সারাদিন অফিস করে ক্লান্ত হয়ে রাত আটটা-নয়টা বাজে বাসায় ফিরে।
শরীফউল্লাহ শরীফ, ফরিদপুরের এক কৃষক পরিবারের ছেলে। পরিবারে বড় ছেলে, ছোট বোনটি ক্লাস সিক্স এ পড়ে। স্নাতকোত্তর শেষ করে এক বছর ধরে ঢাকার অদূরে একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করছে। দেশে যে চাকরির অবস্থা, তাতে শরীফের মতো ছেলেদের চাকরি পাওয়া দুষ্কর ব্যাপার, তারপরও দীর্ঘদিন পরিশ্রম আর মেধার গুনে এই চাকরিটি পেয়েছে। অফিসের নিকটে একটি ফ্ল্যাট বাসায় ভাড়া করে থাকে সে। তার বাবা দেশে টুকিটাকি কৃষি কাজ করে। পূর্বে অন্যের জমি চাষ করত , শরীফ চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে আর করে না। তার বাবা-মার শহর ভালো লাগে না, তারা গ্রামে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, শরীফও জোর করে না তার সাথে থাকার জন্য।
শরীফের বাবা ওদিকে পাশের গ্রামের এক ধার্মিক পরিবারের মেয়ের সাথে ছেলের বিবাহ ঠিক করেছে। মেয়ের নাম কুলসুম, মাদ্রাসায় কিছুদিন লেখাপড়া করেছে। তার বাবা ফোন করে বলে দিয়েছে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে আসতে। সেও তার বাবার কথামতো আফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে যায়।
সপ্তাহ খানেক পর, বিয়ের ছুটি শেষে বউকে নিয়ে সে ভাড়া বাসায় উঠেছে। বিয়ের পর তার দিনলিপিতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে বাজারে যাওয়া, মসজিদ থেকে ফিরার সময় সে এখন নিয়মিত বাজারে যায় তারপর বাসায় ফিরে। কুলসুম তার জন্য রান্নাবান্না শেষ করে সকালের খাবার এবং হটপটে দুপুরের খাবার রেডি করে রাখে। শরীফ চলে যাবার পর, কুলসুম অবসর সময়ে কোরআন-হাদিস পড়ে।তাছাড়া শরীফও কুলসুমকে এলেম শিক্ষা দেয়, ধর্মীয় বিধি-নিষেধ সম্পর্কে, পর্দা করার উপকারিতা সম্পর্কে বলে।
এক সকালে শরীফ বাজার থেকে আসতে না আসতেই দরজায় নক করার শব্দ শুনতে পায়। শরীফ দরজা খুলে দেখে, পিন্টুর ভাই মিন্টু ও তার বন্ধু রবিন।তাদেরকে দেখে শরীফ অনেকটা ভীত কারণ তারা পিন্টুর লোক। পিন্টু এলাকার মস্ত বড় ক্যাডার, স্থানীয় এমপি তাকে পোষণ করে। ভীত হয়েই কুলসুমকে সে বলল, তাদের চা দিতে। চা খেতে খেতে তারা বলল, “দাদা একটা কনসার্টের আয়োজন করতাছি, তো পিন্টু ভাই আমনের কাছে আসতে কইলো।বুঝছেনইতো কিয়্যারলাইগ্যা আইছি!’’ সে তাদেরকে ১০০০ টাকা দিয়ে তারাতারি বিদায় করে। টাকাটা নিয়ে মিন্টু ও রবিন বেরিয়ে আসলো, রাস্তায় বের হয়েই মিন্টু রবিনকে বলল,
‘শরীফ ভাইয়ের বউডার কন্ঠটা শুনছস জোশ্ না। ’
‘হ্যা চরম টোনটা,কত আস্তে আস্তে কথা কইলো দেখলি। কিন্তু তারেতো দেখতে পারলাম না, যেইভাবে পর্দা করছে চোখটা পর্যন্ত দেহা যায় না। ’
‘বোধয় ভালোই হইবো, লম্বাও শরীফের মত’ বলতে বলতে তারা চলে গেল তাদের ক্লাবের দিকে।
শরীফ শুক্রবারে আছরের নামায পড়ে কুলসুমকে নিয়ে বাড়ির পাশের রাস্তাটায় হাঁটতে বের হয়েছে, হাঁটতে হাঁটতে তারা বাজারের পাশের রাস্তাটিতে যায়। শরীফ আঙ্গুলটাকে উঁচু করে কুলসুমকে বলে, ঐ যে দোকান গুলো দেখা যাচ্ছে না ওটা বাজার, ওখান থেকেই আমি বাজার সদাই কিনি। কুলসুম চোখ ফিরিয়ে দেখতে পেল অনেক পর্দাশীল ও সাধারণ মহিলা বাজারে এসে বাজার-সদাই কিনছে। কুলসুম অবাক হয়ে শরীফকে বলছে,
‘দেখ, অনেক মহিলারা বাজারে এসেছে। ’
‘হুম, অনেকেই আসে। ’
‘তাদের কি স্বামী নেই যে তারা বাজারে আসে?’
‘হুম, আছে। কিন্তু তাদের স্বামীদের সময় নেই বাজারে আসার। তুমি হয়তো জান না, বাংলাদেশের চাকরির কি অবস্থা! কিছু কিছু কোম্পানি লোকদের খাঁটিয়ে মারে, তারা হয়তো রাত এগারটার আগে বাসায় ফিরতে পারে না এমনকি শুক্রবারেও অফিসে যাওয়া লাগে। অর্থ উপার্জনের জন্য অফিসকে তারা ঘর-বাড়ি বানিয়ে ফেলে। তুমি দেখো না আমিও মাঝে মাঝে এগারটায়-বারটায় বাসায় ফিরি। বেসরকারি চাকরিগুলো এমনই। তাই আমিও চাই টুকিটাকি দরকারি জিনিসগুলো তুমি বাজারে এসে নিয়ে যাও। ঐ যে ওখানে কর্ণারের দোকানটা দেখছ না, ওটা আমার পরিচিত দোকান। ওখানে বলে দিবো, যদি কিছুর প্রয়োজন হয় উনার কাছে আসলেই নিতে পারবে। ’
‘হুম, পারবো। ওরা যদি নিতে পারে আমি পারবো না কেন? ভালই হলো, তুমি মাঝে মাঝে টুকিটাকি দরকারি জিনিসগুলো আনতে ভুলে যাও ওগুলো ছাড়া এতদিন রান্না করতে হতো। এখন আর তা হবে না, লাগলে আমি নিয়ে যাব। ’
‘তাহলে তো ভালোই হবে। 'চল এবার, বাসায় ফিরি' বলে, শরীফ কুলসুমকে নিয়ে বাসায় ফিরে আসে।
পরদিন শরীফ অফিস থেকে ফিরার সময় দেখে তার বাসার সামনের গলির রাস্তার মোড়টায় লোকজন ভীড় করে কি যেন আলোচনা করছে। সে উৎসুক হয়ে ওখানে গিয়ে ঘটনার অনেকাংশ শুনল। শুনে তার মনটা ব্যাথিত হয়ে উঠলো, বাসায় ফিরে গোসল করে রাতে খাবারের সময় কুলসুমকে বলতে লাগলো-
‘জানো আজ রাস্তায় শুনলাম রহিমের মেয়েটা আছে না, ও নাকি পাগলের মত আচরণ করছে। ’
‘কেনো কি হয়েছে হঠাৎ?’
‘হাবু চাচা বলছে, পিন্টুর বাবা গতকাল নাকি মেয়েটাকে দোকান থেকে চিপস আর কেক কিনে দিয়ে উনার সাথে বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। উনার বাসা থেকে ফিরার পর থেকে মেয়েটা এমন করছে। কেউ কেউ বলছে পিন্টুর মা নাকি গত পনের দিন ধরে বাসায় নেই, বাবার বাড়িতে গিয়েছে। মনে হয়, পিন্টুর বাবা কিছু একটা করেছে। কেউ তো পিন্টুর ভয়ে জোর গলায় কিছু বলতে পারছে না। আবার এ সকল ঘটনা বেশী রটলে মেয়েটার অবস্থা কি হবে বুঝতেই পারছো। ’
‘ছিঃ এইটুকু মেয়েকে, বয়স কত হবে ৭ কি ৮! ভাবতেই অবাক লাগছে, মানুষ এরকম পশু হয় কিভাবে? আমার খুব খারাপ লাগছে বলে কেঁদে ফেলল কুলসুম। তাদের কি কোন বিচার হবে না, বলে আবারও কাঁদতে লাগলো। ’
‘কে করবে বিচার? তারা সব এক দলের লোক। সরকার তো তাদের হাতেই ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে। পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নিবে না। ’
২.
শরীফের অফিসে সকালে কাজ থাকে না বললেই চলে। এই সময়টাতে অফিসের সকলে মিলে একটু গল্প গুজব করে। শরীফ খুব একটা গল্পে শামিল হয় না। কাজ গুলো গুছিয়ে রাখে এই সময়ে, মাঝে মাঝে দু'একটা কথা বলে ওদের সাথে যুক্ত হয়। এক সকালে আরিফ পত্রিকায় হাত দিয়ে বলতে লাগলো-
‘আহারে! দেশে আর কোথাও নিরাপত্তা নেই, ক্যান্টনমেন্টেও মেয়েটা ধর্ষিত হলো, গরীব ঘরের মেয়ে টিউশনি করে ফিরছিল।’
গরীবুল্লাহ সাহেব বলল, ‘ফেসবুকে দেখলাম মেয়েটা নাকি মঞ্চে অভিনয়, গান-বাজনাও করত। ’
মোহম্মদ আলী কথা টেনে বলল, ‘ঠিকই আছে এই ধরণের মেয়েদের বেশী করে ধর্ষণ করা উচিত। ধর্ম-কর্ম না করে গান-বাজনা করে, পর্দাতো করেই না, সব দেখিয়ে বেড়াবে আর পুলারা ধর্ষণ করবে না তো কি করবে ? ’
গরীবুল্লাহ বলল, ‘আলী সাহেব একদম ঠিক কথা বলেছেন। ’
আমি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললাম, ‘এটা আপনি কি ধরণের কথা বললেন, আলী সাহেব? এমন যুক্তি দাঁড় করালেন যে চোর চুরি করেছে তাই দোষটা চোরের নয়, ভূক্তভোগীর। পোশাকের জন্য নারী কিভাবে ধর্ষিত হয় বলেন দেখি। এই যে কিছুদিন আগে পত্রিকায় পড়লাম সাত বছরের মেয়েটা যে ধর্ষিত হলো, কেন হলো? পশ্চিমা বিশ্বের মেয়েরা শুধু টপ পরে ঘুরে বেড়ায়, তাহলে তাদের আরও বেশি ধর্ষণ হওয়ার কথা। ’
আলী বলে, ‘দূর মিয়া আপনি দেখি কিছুই জানেন না, পরিসংখ্যান হাতিয়ে দেখুন, বছরে সবচেয়ে বেশী ধর্ষণ হয় আমেরিকাতে। আর দেখুন আরব দেশ গুলোতে কোন খবরই পাওয়া যায় না। ’
‘হ্যা, আমি সত্যিই জানি না, রেফারেন্স দিন পরিসংখ্যানের, দেখি কোথায়?’
‘রেফারেন্স কি আমি মুখস্থ করে রেখেছি নাকি!’
‘আর উদাহরণ দিলে শুধু আমেরিকার দেন কেন? আমেরিকা কি একমাত্র দেশ আর কোন দেশ নেই। সুইডেন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, জাপান, নিউজিল্যান্ড এসব দেশের উদাহরণ দেন। জানেন, এ সকল দেশে আপনার-আমার দেশের মেয়েরা রাতের ১০-১১টায় সাইকেল চালিয়ে অফিস থেকে নির্ভয়ে বাসায় ফেরে। আর আপনার আরব দেশের কথা কি বলব, ওরাতো এক কাজের মেয়েকে বাবায় একদিন তো ছেলে একদিন, দাসী বলে কথা। মেয়েদের তো ওদের দেশে কোন মূল্যই নেই, ধর্ষণ করা তো কোন অপরাধ না, তো আবার ধর্ষণের খবর আসবে কোথা থেকে। দিনশেষে তেল বিক্রি করে বেইলি ড্যান্সের পার্টিতে টাকা উড়ায়, আর তো কোন কাজ নেই তাদের। ’
আলীর চেহারায় উত্তেজনার ছাপ, মুখে কিছু বলতে পারছে না। গরীবুল্লাহ সাহেব বিচলিত হয়ে চুপ হয়ে আছে।
আমি বললাম, ‘আপনার কি মেয়ে দেখলেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে যায় নাকি? রাস্তায় পাগলীদের দেখলে তো হওয়ার কথা, তারাতো উলঙ্গ হয়ে হাঁটে কিন্তু তাদের দিকে আপনারা ফিরেও তাকান না। তাতে কি প্রমাণ হয় না এগুলো আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা?’
আলী খুব রাগান্বিত হয়ে আমার টেবিলে জোরে এক থাপ্পর দিল, পারলে এখনই আমাকে পিটাবে!!
হাসতে হাসতে বললাম, ‘টেবিলে থাপ্পর দিয়ে লাভ নেই যুক্তিতে আসুন। সেটাতো পারবেন না, পারবেন শুধু ধর্ষকদের পরোক্ষভাবে সাপোর্ট দিতে। দেখুন পৃথিবীর ইতিহাস ঘেঁটে অপরাধী, ধর্ষক যুগ যুগ ধরে ছিল, থাকবে। কিন্তু তাদেরকে ধমিয়ে রাখতে হবে কঠোর আইন দ্বারা। পর্দা দিয়ে ওদের দমন করা যাবে না। ’
‘আপনিতো ইহুদি-নাসারাদের দালাল দেখছি, আপনার সাথে কি যুক্তি-তর্ক করব। ’
‘আপনাদেরতো এই একটাই বুলি। কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই, পারেন সব কিছুর শেষে এই একটি কথা টেনে আনতে। রেডিও আবিষ্কারের পর বলেছেন। তারপর টিভি, মোবাইল, ইন্টাররেট, ফেসবুকের সময়ও বলেছেন এগুলো ইহুদি-নাসারাদের তৈরী এগুলো ব্যবহার করা হারাম, এখনতো এ সবই আপনারা ব্যবহার করছেন।করছেন কি পুরো দখল করে রেখেছেন।! আপনাদের মত লোক অনেক দেখেছি, মোবাইলের গ্যালারীতে একসাথে পর্ণ ভিডিও আর ওয়াজ রাখেন, একা থাকলে পর্ণ আর সবার সামনে ওয়াজ। আবার দেখি বউকে রেখে মাসে একবার হলেও ব্রোথেলে যান আর মুখে শুনান ধর্মের কথা। আপনারা বড্ড অভিনয় করতে পারেন। ’
আলি এবার প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে ঐ নাস্তিকের বাচ্চা বলে প্রায় হাত তুলে ফেলেছিল, শরীফ এসে তাকে শান্ত করল। সে বলল, “থামুন এবার, ঘটনাকে আর বাড়াবেন না’’। কিছুক্ষণ পর শরীফ বলল, ‘আলি সাহেব আপনি যতই বলুন, ধর্ষক একজন অপরাধী তার শাস্তি হওয়া উচিত। নাহলে এই অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাবে। ’
আলি জিম ধরে বসে রইলো, কিছু বলল না। ম্যানেজার সাহেব অফিসে আসলো, সবাই কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
বাড়িতে এসে শরীফ খাওয়ার সময় কুলসুমকে অফিসের ঘটনাগুলো বলল। কুলসুম বলল, “মেয়েদের পর্দা করা অবশ্যই প্রয়োজন, ইসলামের বিধান অবশ্যই পালনীয়। তাই বলে ধর্ষণের প্রধান কারণ পর্দা নয়, এগুলো বিকৃতরুচির পুরুষ, পশুর চেয়ে অধমদের কাজ। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত। ’’
৩.
শরীফ প্রায়ই টুকিটাকি জিনিস আনতে ভুলে যায়, আগে তার দ্বিতীয়বার যাওয়া লাগতো, এখন কুলসুমই আনে বাজার থেকে। একদিন কুলসুম বাজার থেকে আসছিল, পিন্টু আর পিন্টুর দল তার ক্লাবের সামনে আড্ডা মারছে। কুলসুমকে দেখার পর পিন্টু, মিন্টুকে জিজ্ঞাসা করলো-
‘এইডা ক্যাডা রে?’
‘দাদা ঐ বাড়িতে ভাড়া থাকে না শরীফ, হের বউ। ’
‘লম্বা-চূড়া তো ভালোই, বোরকা ছাড়া দেখছসনি কহনো?’
‘না, দাদা। একদিন বাসায় গেছিলাম তহনও দেহিনাই, বাসায়ও পর্দা কইরা থাহে। তয়, কন্ঠ হুনছিলাম, খুব আস্তে সুন্দর কইরা কথা কয়। ’
‘তাইলে তো মালডা ভালো হইবো, আর পরহেজগার মাইয়্যারা বেশী সুন্দর হয়। একদিন হের বাসায় যামুনে মনে কইরা দিস তো। ’
‘আইচ্ছা দাদা। ’
কুলসুম তাদের পাশ কাটিয়ে বাসায় চলে আসলো। সে আসার সময় কিছুটা খেয়াল করেছিল ছেলে গুলো তাকে নিয়ে আলোচনা করছে। শরীফ আসার পর ঘটনাটি বলল।
শরীফ বলল, ‘থাক্ তোমাকে আর বাজারে যাওয়া লাগবে না, আমি সব নিয়ে আসব।’
কিছুদিন পর শরীফের সাথে পিন্টুর দেখা। পিন্টু শরীফকে দেখে বলল,
‘কি শরীফ ভাই কেমন আছেন? আছেন তো ভালোই। ভাবীরে নিয়া আসছেন, ভাবীর হাতে একদিন চা খাওয়ার দাওয়াত দিলেন না, এইডা কেমন কথা!’
আচ্ছা যাবেন একদিন, বলে শরীফ চলে আসলো।
পিছন থেকে শরীফ শুনতে পেল, ‘আইচ্ছা চা খাইতে আইতাছি একদিন, রেডি থাইককেন’। চোখে মুখে চিন্তার ছাপ নিয়ে শরীফ বাসায় আসলো। কুলসুমের চোখে তা ধরা পড়ল, খাবারের সময় তাকে সে জিজ্ঞাসা করল,
‘কি হয়েছে, কিসের চিন্তা করছো?’
‘পিন্টুর সাথে দেখা হয়েছিল রাস্তায়। সে নাকি বাড়িতে চা খেতে আসবে, কিন্তু কেন বুঝতে পারছি না। কারণ ছাড়া তার তো আসার কথা নয়। ’ একটু চুপ থেকে আবার বলল, ‘বাসাটা বদলে ফেলা প্রয়োজন, এখানে আর থাকা যাবে না। ’
‘তুমি যা ভালো মনে কর’ বলে কুমসুম, টেবিলের প্লেটগুলো হাতে নিয়ে রান্না ঘরের দিকে ছুটে গেল। ওদিকে শরীফ কিছুক্ষণ চেয়ারটায় বসে রইলো।
দুইদিন না যেতেই পিন্টু হাজির। শরীফ দরজা খোলা মাত্রই পিন্টু –
‘কি শরীফ ভাই আছেন কেমন? ভাবীর হাতে চা খাওয়ার জন্য আইয়্যা পড়ছি। ঘরে বসাইবেন না?’
‘হুম আসুন, বসুন’ বলে শরীফ কুলসুমকে বলে আসলো চা করার জন্য।
‘আরে ভাই আপনি এত ছুটাছুটি করতাছেন ক্যান? ব’ন এখানে, দু'একটা কথা কই। ’
‘হুম, বলেন। ’
‘অনেক দিন ধইরা এলাকায় আছেন রাজনীতি করেন না ক্যান? আপনার মত লোক আমাদের লাগে, শিক্ষিত মানুষ আবার আল্লা-বিল্লাহও করেন। আপনারে এলাকার মানুষ ভালোই জানে। আপনি আইলে আমাদের দলের সুনাম বাড়বে, যোগ দেন আমাদের লগে। ’
‘চাকরি করে এগুলো করার সময় কোথায়? তাছাড়া আমি এ এলাকার মানুষ না আর আমার এগুলো ভালো লাগে না। ’
‘হু বুঝলাম, তো একদিন ক্লাবে তো আইতে পারেন। ’
ওদিকে শরীফ কে ডাকল চা নেওয়ার জন্য। শরীফ চা নিয়ে পিন্টুকে দিল।
পিন্টু চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ‘আহ্, অমায়িক চা, জীবনেও এমন চা খাই নাই। ভাবী বানাইছে না, কই ভাবি কই, ধন্যবাদটা সামনাসামনি না দিলে অয় না। ’
‘ভিতরে কাজ করছে , আমি বলবো আপনি প্রশংসা করেছেন। ’
‘কি চা খাইলাম রে’ বলে চায়ের শেষ চুমুকটা দিয়েই পিন্টু উঠে দাঁড়িয়ে আবার বলতে লাগলো “আমার আবার একটু ফিল্ডে যাইতে হইবো, আপনি একদিন যাইয়েন ক্লাবে’’।
‘দেখি সময় পেলে যাওয়ার চেষ্টা করবো’।
‘ভাবি নির্ঘাত অনেক সুন্দরী, এত সুন্দর চা সুন্দর মানুষ ছাড়া বানাইতে পারে না’ বলে পিন্টু বের হয়ে গেল।
শরীফ রুমের ভিতর থেকে হতবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো, তারপর দরজাটা লাগিয়ে রুমে চলে আসলো।
৪.
শরীফ অফিস থেকে ফেরার সময় নতুন বাসা খোঁজ করে বাসায় ফিরে। সেদিনের পর থেকে শরীফের মুখে দুঃশ্চিন্তার ছাপ। নতুন একটা বাসায় না উঠা পর্যন্ত তার শান্তি আসবে না। একদিন রাতে খাবারের সময় কুলসুম কিছু একটা বলতে চেয়ে থেমে গেল। শরীফ বলল, ‘কিছু বলবে?’
কুলসুমের চোখে-মুখে লজ্জা, মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। কিছুক্ষণ চুপ থেকে সে তাৎক্ষনিক বলে ফেলল, ‘আল্লাহর রহমতে তুমি বাবা হতে চলেছো’।
শরীফ কথাটা শুনে কি বলবে বুঝতে পারছে না, সে কুলসুমের দিকে তাকিয়ে আছে আর কুলসুম লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। সমস্ত দুঃশ্চিন্তাগুলো শরীফের কাছ থেকে যেন ধুয়ে-মুছে গেল, ভিতরে কেমন যেন একটা আনন্দ বয়ে যাচ্ছে, ঘুমানোর আগে শরীফ দু'রাকাত নফল নামায পড়ে আল্লাহ্’র কাছে শুকরিয়া আদায় করল। পরদিন হাসিখুশি হয়েই অফিসে গেল। কুলসুম শরীফের দিকে তাকিয়ে স্বস্তিবোধ করছে, পিন্টু আসার পর থেকে কেমন যেন হয়ে গিয়েছিল। আজ সে আগের রূপটা দেখতে পেল, মনে মনে বলতে লাগল, ‘আল্লাহ্ যেন আমাদের সবসময় এমনই রাখে’।
রান্না করতে গিয়ে কুলসুম ভাবলো আজ ভালো কিছু রান্না করবে। ফ্রিজ থেকে মাংসের প্যাকেটটা নামিয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখল। রান্নার সবকিছু গুছাতে গিয়ে দেখতে পেল মাংসের মশলা নেই। একবার ভাবলো মশলা ছাড়াই রান্না করবে আরেকবার ভাবলো রান্নার মজাটা নষ্ট হয়ে যাবে। কিছুক্ষণ ভেবে শরীফকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করল মশলা আনতে বাজারে যাবে কিনা? শরীফ অনুমতি দিল। কুলসুম কিছু টাকা নিয়ে বাজারের দিকে বের হয়ে গেল, দ্রুত হেঁটে যাওয়ায় রাস্তায় যে লোকজন নেই চোখে পড়ল না। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় রবিন দেখেছিল কুলসুম বেরিয়েছে। রবিন পিন্টুকে গিয়ে খবরটা দিল। পিন্টু খবর শুনে সাথে সাথে ক্লাবের সামনে রাস্তায় দলবল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কুলসুম বাজার থেকে ফিরছে, এগুচ্ছে বাসার দিকে। কিছুদূর আসার পর লক্ষ্য করলো, রাস্তাটা আজ বেশ নির্জন। তার মনে কেমন একটা ভয় ঢুকে গেল। সে যতদিন বাজারে গিয়েছে এতটা নির্জন কখনো দেখেনি। আসতে আসতে যখন ক্লাবের সামনে আসলো, দেখলো পিন্টু দাঁড়িয়ে আছে তার দলবল নিয়ে। সে তাদেরকে দেখে হাঁটার গতি আরও দ্রুত করলো। সামনে আসার পর পিন্টু জিজ্ঞাসা করলো,-
‘ভাবি কেমন আছেন?’
কুলসুম কিছু বলল না, সে এগিয়ে যেত চাইলো কিন্তু পিন্টু গিয়ে পথটা রোধ করে বলতে লাগল-
‘অনেকদিন ধইরা আপনেরে দেখার স্বাদ জাগছিল। আজ আপনেরে সামনে পাইছি, সে স্বাদটা পূরণ করতে চাই ভা.......বী। ’
‘আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে পথটা ছাড়ুন দয়া করে। ’
‘আপনার চেহেরাডা দেখাইলে ছাইড়া দিমু। নাইলে আমরাই আপনেরে দেখতে নিয়া যামু। ’
‘কি বলছেন আপনি? দয়া করে অসভ্যবতা করবেন না। ’
‘আমরা তো যথেষ্ট সভ্য আছি বলে’ পিন্টু কুলসুমের হাতটা ধরে ক্লাবের দিকে টান দিল, তার সঙ্গীরা মুখ চেঁপে ধরে তাকে সাহায্য করল। কুলসুমকে নিয়ে বন্দী করল ক্লাবের একবারে কোনার ঘরটায়। পিন্টু ঢুকেই দরজাটা বন্ধ করে দিল। কুলসুম ওদিকে চিৎকার করে বলছে, ‘দয়া করে এ কাজ করবেন না আমার পেটের দু'মাসের সন্তানটা’, বলে হু হু করে কাঁদতে শুরু করল। পিন্টু উচ্চস্বরে, ‘এইডাইতো ঠিক সময়’ বলে কুলসুমের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।
কিছুক্ষণ পর পিন্টু বাইরে এসে তার দলবলকে বলল, 'কেডা কেডা যাবি রে? যা একটা একটা কইরা, তয় মারিস না।'
ওদিকে কুলসুম প্রায় অচেতন, একটার পর একটা ঝাঁপিয়ে পড়ছে কুলসুমের অচেতন দেহের উপর। কুলসুমের দেহ নিঃশ্চুপ হয়ে গেছে, শরীরের প্রতিটি কোষে ছড়িয়ে পড়া ধ্বংসাত্মক জীবাণুগুলো রক্তবীজের মত বংশবৃদ্ধি করে চলছে তার দেহের ভিতর, একটি সময় কুলসুমের দেহের প্রতিটি কোষ নিজেদের সংবরণ করে গুটিয়ে নিয়েছে কেউ তখনও টের পায়নি।
বিকেলের দিকে শরীফ একবার ফোন দিয়ে দেখল, ফোন বন্ধ আছে। ঘন্টাখানেক পর আবারও ফোন দিয়ে দেখল যে ফোন বন্ধ। সে আর তখন থাকতে পারল না, বসকে বলে অফিস থেকে সরাসরি বাসায় আসলো, এসে দেখল বাসা তালা দেওয়া। শরীফ কিছুই বুঝতে পারছে না।কি করবে সে খুঁজে পাচ্ছে না, আমাকে ফোন দিয়ে সব ঘটনা বলল। আমি তাৎক্ষণিক ছুটে আসলাম, শরীফকে নিয়ে এ বাড়ি, ও বাড়ি গিয়ে খোঁজ করতে লাগলাম। রাত ন’টা বাজে, শরীফ কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। শরীফের মনে ভয় কাজ করছিল পিন্টুকে নিয়ে আমাকে সে বিষয়ে ইঙ্গিত করল।
বললাম, ‘চলেন থানায় জিডি করে আসি’।
‘কিভাবে করবো সন্দেহ করে? তাছাড়া পিন্টুর বিরূদ্ধে থানায় মামলা নিবে না।’
‘তাহলে হারিয়ে যাওয়া নিয়ে মামলা করব’ বলে শরীফকে থানায় নিয়ে গেলাম। শরীফ থানার ওসি সাহেবকে সবকিছু বলল।
ওসি বলল , “দেখেন কোথাও গেছে হয়ত”।
শরীফ বলল, ‘ওর কোথাও যাওয়ার কথা নয়’।
ওসি হেসে বলল, ‘এরকম কত দেখেছি পরে দেখি আরেক স্বামীর হাত ধরে হাজির। আপনার এ কেইস নাকি’?
উত্তেজিত হয়ে বললাম, ‘আপনি মামলা নিবেন না?’
ওসি বলল, ‘না’।
পরিচিত এক ডিআইজিকে ফোন না দিতেই ওসি সাহেব বলে উঠলো ‘আচ্ছা আমি মামলাটা নিচ্ছি’।
পরদিন সকালে শরীফ বেড়িয়েছে, উদাস ভাবে হাঁটছে। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তার চোখ পড়ল ময়লার স্তুপের কাছে পড়ে থাকা কালো কাপড়টির উপর। তার কেন যেন মনে হচ্ছিল এটা কোন বোরকা। সে দৌড়ে গেল ওখানে, গিয়ে তুলে নিল কাপড়টি, তুলে নিয়েই সে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে হু হু করে কান্না শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর সে আমাকে ফোন দিয়ে জানালো,তাৎক্ষনিকভাবে আমি পুলিশকে জানালাম, পুলিশ এসে বোরকাটি নিয়ে পর্যালোচনা করতে লাগল। বোরকাটির একটি বুতামও নেই, কিছু অংশ ছেঁড়া। পুলিশ ধারণা করল, যদি মার্ডার হয়ে থাকে তাহলে আশেপাশে হয়ত কোন চিহ্ন পাওয়া যাবে, তারা পাশের নালা, ড্রেন গুলোর চারিপাশটা অনুসন্ধান করতে লাগলো কিন্তু কোনকিছুর চিহ্ন পাওয়া গেল না। পরদিন পুলিশ এসে বুলড্রেজার দিয়ে ময়লার স্তুপে খোঁজ করতে লাগল কিন্তু কিছু পাওয়া গেল না।
এদিকে শরীফ একেবারে নিঃস্তব্ধ, খাওয়া-দাওয়া একদম ছেঁড়ে দিয়েছে। শরীফের আত্মীয়-স্বজন এখন তার বাসায়। আমি যাওয়ার পথে শরীফের বাসায় থাকি কিছুক্ষণ। শরীফ তার ঘরে দরজা লাগিয়ে একা একা বসে থাকে। মানসিক শক্তি আসলে নামাযে দাঁড়িয়ে যায় আর দু’আ করতে থাকে কুলসুমকে যেন জীবিত পাওয়া যায়। হঠাৎ পুলিশের ফোন আসে, ফোন রিসিভ করতেই শুনতে পায় বাজারের পাশে ব্রীজটার কাছে আসতে। ফোনটা রেখে সে দৌড়ে সেখানে যায়, গিয়ে দেখে লোকজন ওখানে ভীড় করে আছে। সে ভীড় ঠেলে ভিতরটায় প্রবেশ করেই দেখতে পায় পুলিশ বস্তার ভিতর থেকে একটা নারীর লাশ বের করছে। সে দৌড়ে লাশের কাছে গিয়ে লাশটি উল্টিয়ে চিরচেনা প্রিয়তমার চেহেরা দেখেই স্তম্ভিত হয়ে যায়, আকাশের দিকে তাকিয়ে সে হু হু করে কাঁদতে থাকে, ঐ দুরের আকাশটা তার দিকে ভেঙ্গে পরে, সূর্যটা যেন প্রচণ্ড বেগে তার দিকে ধেয়ে আসছে, একটি সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে।
শরীফ জেগে ওঠে দেখে আমাকে, জিজ্ঞাসা করে, ‘কুলসুম কোথায়’?
‘পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে গেছে’।
কান্না বিজরিত কন্ঠে, ‘কেন দিয়েছেন ওকে? তারা কিছুটি বের করতে পারবে না, অনেক কষ্ট দিবে আমার কুলসুমকে’ বলে কান্না করা শুরু করে দেয়সে।
আমি তার কাঁধে ধরে কিছুক্ষণ বসে থাকি।
পরদিন জানা যায় ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গিয়েছে। খবরটা শুনার পর শরীফের চোখে যেন ভীষণ অন্ধকার নেমে আসে, ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায় তার শরীরের ভীতর দিয়ে, পৃ্থিবীর সমস্ত কিছু তার মাথার সামনে ঝড়ের বেগে ঘুরতে থাকে।
শরীফ কারও সাথে কোন কথা বলে না, রুমে একা চুপচাপ বসে থাকে। সন্ধ্যায় আমি আসার পর , শরীফ আমাকে দেখে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগে "কি অপরাধ ছিল কুলসুমের? কি অপরাধ ছিল আমাদের সন্তানের, তারা কেন আমাদের সন্তানকে পৃথিবীর মুখ দেখতে দিল না, কুলসুম কেন মা হওয়ার আনন্দ পেল না, সেতো পর্দা ছাড়া কখনো বের হয়নি...তবে কেন তাকে ঐ পশুগুলো ছাড়ল না” বলে কান্না শুরু করে। আমি শরীফকে সান্ত্বনা দেয়ার কোন ভাষা খুঁজে পেলাম না। শরীফকে একা রেখে কিছুক্ষণ পর অামি বেরিয়ে আসি, রাস্তার ওপাশের দোকানটা থেকে একটি সিগারেট ধঁরিয়ে উদাসীন ভাবে আকাশের দিকে হাঁটতে থাকি আর মনের মধ্যে বাজতে থাকে শরীফের কথা গুলো, হাতের সিগারেট টান দিতেই লবণের স্বাদ লাগলো বুজতে বাকি রইলো না চোখের পানি বেঁয়ে ঠোঁট ভিজে মুখে ঢুকেছে , হঠাৎ অজান্তেই হাসি দিয়ে বলতে লাগলাম,
“হায়রে আমার দেশ, তোমার কত সন্তানদের এভাবে আর চলে যেতে হবে? এই মৃত্যুর মিছিলে আর কতজন শামিল হলে, তোমার কুলাঙ্গার সন্তানরা ধর্ষকের বিপক্ষে দাঁড়াবে?’’
০৩-০৪-২০১৮